ঢাকা,রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

রামু-কক্সবাজারে আকস্মিক বৃষ্টিপাতে ইটভাটায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

সোয়েব সাঈদ, রামু ::

কক্সবাজার ও রামুতে কয়েকদিনের আকস্মিক বৃষ্টিপাতে ইটভাটাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পুড়ানোর জন্য প্রস্তুত করা লাখ লাখ ইট বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এনিয়ে মৌসুমের শুরুতে দু’দফা বৃষ্টিপাতের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলো ইটভাটা মালিকরা। সরকারি উন্নয়ন কর্মকান্ড ও ব্যক্তি মালিকানাধিন কাজেও ইটের এ ক্ষতির প্রভাব পড়ার আশংকা করছেন অনেকে।

রামুর ইটভাটা মালিক সমিতির কর্মকর্তা ও জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল হক কোম্পানী জানিয়েছেন, ইট পুড়ানোর মৌসুম শুরুর ১৫দিনের মধ্যে ফের বৃষ্টিপাতে রামুর ৩০টি ইটভাটা মালিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। গত ক’দিনে বৃষ্টিপাতের কারনে রামুর ইটভাটাগুলোতে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রামুর ব্যবসায়িদের এমন ক্ষতি কাটিয়ে উঠাও অসম্ভব।

স্থানীয় লোকজন ও ইটভাটার মালিকদের সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলায় এলাকায় প্রায় শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির পাশাপাশি রোদও ছিলো না। একারনে এসব ইটভাটায় সারি সারিভাবে প্রস্তুত করা লাখ লাখ কাঁচা ইট সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে।

রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের এমবিএ ব্রিকস এর মালিক সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো জানান, আকস্মিক বৃষ্টিতে তার ইটভাটায় ৫ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টিপাত ও ইটের অভাবে কয়েকদিন ধরে শতাধিক শ্রমিক বেকার সময় পার করছে। সবমিলিয়ে তাঁর ইটভাটায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এখন শীতের সুস্ক মৌসুম। এসময় বৃষ্টিপাত হয়না বললেই চলে। কিন্তু অনাকাংখিত এ বৃষ্টি তাদের ইটভাটাকে এলোমেলো করে দিয়েছে। বৃষ্টিপাত মোকাবেলায় কোন ইটভাটাগুলোতে ছিলো না আগাম কোন প্রস্তুতি। ছিলো না পর্যাপ্ত পলিথিন। যার কারনে বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে গেছে ভাটাগুলোতে পুড়ানোর জন্য রাখা কাঁচা ইট। কোথাও পলিথিন দেয়া হলেও নিচে পানি জমে তলিয়ে গেছে ইটের সারি। বর্তমানে ভাটাগুলোতে হাজারো শ্রমিক কর্মহীন সময় পার করছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় অনেক ভাটায় আগুনও নিভে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

রামু মন্ডলপাড়ার জাকি ব্রিকস এর স্বত্ত্বাধিকারী জাহেদ হোছাইন চৌধুরী বাদল জানালেন, বৃষ্টিতে এ ইটভাটায় নতুন তৈরী করা ৪ লাখ কাঁচা ইট সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ইটভাটার কাজ কয়েকদিন বন্ধ থাকায় আর্থিক লোকসান গুনতে হচ্ছে। এসব কারনে তাঁর ইটভাটায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আরো একাধিক ইটভাটা মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রামুর প্রতিটি ইটভাটায় আকস্মিক বৃষ্টির কারনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক ইটভাটা মালিক ঋন নিয়েও ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। যারা এখন নিঃস্ব হওয়ার পথে।

জানা গেছে, কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলায় বর্তমানে সেনানিবাস, বিকেএসপিসহ সরকারের অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড চলছে। যাতে ইটের চাহিদা ব্যাপক। কিন্তু সাম্প্রতিক দু’দফা বৃষ্টিপাতে ইটভাটাগুলোতে বিপুল পরিমান কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে ইটের মূল্য বৃদ্ধিসহ উন্নয়নকাজে সংকটের আশংকা করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: